বগুড়া জেলার আতাইলহাট একটি ঐতিহ্যবাহী হাট, যা স্থানীয়দের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। হাটটি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই হাটে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী কেনাবেচা হয়, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আতাইলহাটের অবস্থান:
আতাইলহাট বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে এই হাটের অবস্থান। হাটটি করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত, যা এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। হাটে পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় বাস বা অটোরিকশা ব্যবহার করা যায়।
আতাইলহাটের প্রসিদ্ধ খাবার:
আতাইলহাট তার ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। হাটে আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা এখানকার বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। নিম্নে আতাইলহাটের কিছু প্রসিদ্ধ খাবার উল্লেখ করা হলো:
- কটকটি: মহাস্থানগড়ের কটকটি বগুড়ার একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন, যা চালের গুঁড়া, গুড় এবং ঘি দিয়ে তৈরি করা হয়। এর স্বাদ ও খ্যাতি দেশজুড়ে প্রচলিত। আতাইলহাটে এই কটকটি সহজলভ্য, যা স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে।
- দই: বগুড়ার দই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও জনপ্রিয়। আতাইলহাটে স্থানীয় কারিগরদের তৈরি দই পাওয়া যায়, যা স্বাদে অতুলনীয়। বিশেষ করে আকবরিয়া, এশিয়া সুইটস, রফাত দই ঘর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের দই অত্যন্ত জনপ্রিয়।
- লাচ্ছা সেমাই: বগুড়ার লাচ্ছা সেমাই দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি চাহিদা মেটায় এবং বিদেশেও রপ্তানি হয়। আতাইলহাটে এই লাচ্ছা সেমাই পাওয়া যায়, যা বিশেষ করে রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদা থাকে।
- শিক কাবাব: বগুড়ার শিক কাবাব তার স্বাদ ও মানের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। আতাইলহাটে সন্ধ্যার পর শিক কাবাবের স্টলগুলোতে ভিড় লেগে থাকে। তাজা মাংস ও বিশেষ মসলার সংমিশ্রণে তৈরি এই কাবাব স্থানীয়দের পাশাপাশি ভ্রমণকারীদেরও মন জয় করে।
- আলু ঘাটি: বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে আলু ঘাটি অন্যতম। সিদ্ধ আলু, ডিম বা মাছ, এবং মসলার সংমিশ্রণে তৈরি এই পদটি স্থানীয়দের প্রিয়। আতাইলহাটের খাবারের দোকানগুলোতে এই সুস্বাদু আলু ঘাটি পাওয়া যায়।
উপসংহার:
আতাইলহাট বগুড়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাট, যা তার ঐতিহ্যবাহী খাবার ও পণ্যসামগ্রীর জন্য সুপরিচিত। হাটের অবস্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সুস্বাদু খাবার স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বগুড়া ভ্রমণে আতাইলহাটে একবার হলেও ঘুরে আসা উচিত, বিশেষ করে এখানকার প্রসিদ্ধ খাবারের স্বাদ নিতে।