জামুন্না হাট বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী হাট, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই হাটটি আড়িয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত, এবং এর সুনির্দিষ্ট ঠিকানা হলো জামুন্না হাট বাজার, আর.ডি.এ, শাজাহানপুর, বগুড়া। হাটটির আয়তন প্রায় ০.৬ একর, যেখানে ৪টি চান্দিনা ভিটি রয়েছে। বর্তমানে হাটটির ইজারা মূল্য ১০,০০,০০০/- টাকা।
জামুন্না হাটে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বাজার বসে, যেখানে স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বিভিন্ন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করেন। তাজা সবজি, ফলমূল, মাছ, মাংস, দুধ, হাঁস-মুরগি, হস্তশিল্প এবং গৃহস্থালী সামগ্রীসহ নানাবিধ পণ্য এখানে পাওয়া যায়। এছাড়া, স্থানীয় কৃষিজ পণ্য ও হস্তশিল্পের জন্যও এই হাটটি বিশেষভাবে পরিচিত।
বগুড়া জেলা তার ঐতিহ্যবাহী ও সুস্বাদু খাবারের জন্য সুপরিচিত, এবং জামুন্না হাটে এই খাবারগুলোর স্বাদ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। বগুড়ার দই সারা দেশে বিখ্যাত, যা জামুন্না হাটের মিষ্টির দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। এছাড়া, আলু ঘাটি বগুড়ার একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা মাংস ও আলুর সমন্বয়ে তৈরি হয়। জামুন্না হাটের খাবারের দোকানগুলোতে এই পদটি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
হাটের পরিবেশ অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও রঙিন, যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষও এই হাটে আসেন, যা সামাজিক মেলবন্ধন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
জামুন্না হাটের সাম্প্রতিক একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য, যেখানে হাটের সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে বিছানো প্রায় ৩৫ হাজার ইট ও ঢেউটিন প্রভাবশালীরা উঠিয়ে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি হাটের অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
জামুন্না হাটে আসার জন্য বগুড়া শহর থেকে সড়কপথে সহজেই পৌঁছানো যায়। স্থানীয় পরিবহন ব্যবস্থা যেমন বাস, অটোরিকশা বা রিকশা ব্যবহার করে হাটে আসা যায়। হাটের নির্দিষ্ট বাজারের দিনগুলোতে ভিড় বেশি হয়, তাই সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করে আসা ভালো।
জামুন্না হাট বগুড়া জেলার অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি স্থানীয় পণ্য ও খাবারের জন্য একটি প্রধান কেন্দ্র, যা স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। হাটের পরিবেশ, পণ্য বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্যবাহী খাবার এর মূল আকর্ষণ, যা একবার দেখলে ও স্বাদ গ্রহণ করলে মনে গভীর ছাপ ফেলে।