নওগাঁ জেলার ত্রিমোহনী হাট: অবস্থান ও প্রসিদ্ধ খাবার

ভূমিকা

নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ত্রিমোহনী হাট একটি শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী হাট। ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাটটি স্থানীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

অবস্থান ও সময়সূচি

ত্রিমোহনী হাট নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার এই হাট বসে, যেখানে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করেন।

হাটের বৈশিষ্ট্য

ত্রিমোহনী হাটে বিভিন্ন পণ্যের কেনাবেচা হয়, তবে এটি বিশেষভাবে আখের জন্য প্রসিদ্ধ। স্থানীয় চাষিরা তাদের উৎপাদিত আখ এখানে নিয়ে আসেন, যা খুচরা ও পাইকারি উভয়ভাবে বিক্রি হয়। জয়পুরহাট, বগুড়া, নীলফামারীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই হাটে এসে আখ ক্রয় করেন।

প্রসিদ্ধ খাবার: আঁচাফারাম জাতের আখ

ত্রিমোহনী হাটের প্রধান আকর্ষণ হলো আঁচাফারাম জাতের আখ। এই বিশেষ জাতের আখ শুধুমাত্র রাণীনগর ও তার আশেপাশের কিছু এলাকাতেই চাষ হয় এবং এটি অত্যন্ত মিষ্টি ও রসালো। চাষিরা ক্ষেত থেকে আখ তুলে হাটে নিয়ে আসেন, যেখানে আকার অনুযায়ী প্রতি পিস ১০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। এই আখের রস স্থানীয়দের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়, যা ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়িতে মেশিনের মাধ্যমে বের করে প্রতি গ্লাস ১০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

চাষাবাদের বর্তমান অবস্থা

উপজেলার বাহাদুরপুর, চকমনু, চকাদিন, ত্রিমোহনীসহ বেশ কিছু গ্রাম একসময় আখ চাষের জন্য পরিচিত ছিল। তবে বর্তমানে বিকল্প লাভজনক ফসলের দিকে ঝোঁকার ফলে আখের চাষ কমে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় মাত্র ১০ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে।

অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ

ত্রিমোহনী হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি খাজনা আদায় করা হচ্ছে, যা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।

উপসংহার

ত্রিমোহনী হাট নওগাঁ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী হাট, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আঁচাফারাম জাতের আখের জন্য প্রসিদ্ধ এই হাটটি স্থানীয় ও দূরবর্তী জেলার ব্যবসায়ীদের আকর্ষণ করে। তবে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের মতো সমস্যাগুলো সমাধান করা জরুরি, যাতে হাটের সুষ্ঠু পরিচালনা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।