ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

বন্ধুদের সঙেগ্ আড্ডা দিতে দিয়ে একদিন শুরু করলেন ধুমপান।

প্রথমে শখের বশে, তারপর এক সময় পরোপুরি বেইনস্মোকার বনে গেলেন আপন্ একদিন হঠাৎ অনুভব

করলেন আপনার পায়ের ডিমে ব্যথা করছে। হাঁটাহাঁটি কিংবা ক্লান্তির জন্য হতে পারে ভেবে বিশ্রাম নেয়ার পর

ব্যাথাটা চলে যেতেই আরম বোধ করলেন। কিন্তু কিছুদনি পর লক্ষ করলেণ টনটনে ব্যতাটা আবার জেগে উঠেছে।

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

হাটতে ব্যথা করে , বিশ্রাম নিলে চলে যায়। কিনউত এরপর এমন হলোযে বিশ্রাম নিলেও ব্যাথা আর কমে না।

ক্রমেই অসহ্য হযে উঠেছে ব্যাপারটা। রাতে ঘুমোততে পারেন না ব্যথায়। এদকে আবার চিকিৎসকের কাছে।

চিকিৎসক আপনাকে পরীক্ষা কের বললেন, রোগটির নাম বার্জার’স ডিজিজ’।

আপনার আঙুল কেটে ফেলতে হবে। আক্রান্ত আঙুলটা কেটে ফেলার পর কিচুদনি স্বাস্তি বোধ করলেন আপনি।

ঝামেলা চুকে গেছে ভেবে নতুন উদ্যামে শুরু করলেন আবার ধুমপান।

ঝামেলা চুকে গেছে ভেবে নতুন উদ্যমে শুরু কররেন আবার ধুমপান। ফিরে এলো পুরানো ব্যাথাটি।

প্রচন্ড ব্যতায় অতিষ্ট হয়ে উঠলেন আপানি।চিকিৎসক এবার যা বললেন শুনে আপনার মুখ হঅ হয়ে গেল।

আপনার গোটা পা টাই কেটে ফেলতে হবে হাটু তেকে।

সামান্য সিগারেট থেকে এই অসামান্য ক্ষতি হতে পারে জানরে কোনদিন ভুলেও মুখে নিতেন ও জিনিস? নিশ্চয় না।

  • বার্জার টিজিজ কি?

পায়ের ক্ষুদ্র ও মাচারি আকৃতির ধমনীগুরোতে রক্ত চরাচলে প্রতিবন্ধকতার ফলে সৃষ্ট অবস্তার নাম বার্জাস’স

ডিজিজ। ধমপানের ফরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়্ আমেরিকার চিকিৎসাবিজ্ঞানি লিও বার্জার(১৮৭৯-১৯৪৩) এর

নামানুসারে রাকা হয়েছে এর নাম।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটা কথা আছে, নো স্মোকিং নো বার্জার’স। যারা ধমপান করেননা তাদের কখনোই এ

রোগটি হবে না। আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত, নিন্মমধ্যবিত্তের মদ্যে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রচুর ।

বার্জার’স রোগী অপারেশনের পরে যদি আবার ধূমপান মরু করে তাহেল পুনরায় দেখা দেয় রোগটি।

ধমনীতে তিনটি স্বকর থাকে। সবগুলো স্তরই আক্রান্ত হয্ রক্ত চলাচলে বাধাগ্রাস্ততার জন্য পায়ে এক সময় পচন শুরু হয়।

  • রোগের উপসর্গঃ

বার্জার’স রোগের উপসর্গের কয়েকটি ধাপ রয়েছে-

১. রোগী পায়ে , বিশেষ করে কফ মাসল এ ব্যাথা অনুভব করে ।

কখনো কখনো উরু কিংবা নিতম্বম অথবা পায়ের পাতায় ব্যাথা হয়্ ব্যাথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

সাধারণত রোগী হাটলে কিংবা ব্যায়াম করলে শুরু হয় ব্যাথা।ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

বিশ্রাম নিলে ব্যথা সরে যায। রোগী আবার হাটা শুরু কররে তা আবার ফিরে আসে।

এই অবস্থা বারবার চলতে থাকে।

দেখা গেছে, এর আগে রোগী যতটুকু হাটার পর ব্যাথা শুরু হতো, পরে তার চেয়ে কম হাটলেই ব্যাথা শুরু হয় ।

অর্থাৎ আগে যেখানে আধা মাইর হাটালে পায়ে ব্যাথা হতো, সেখানে বর্তমানে সিকি মাইর হাটলেই একই রকম

ব্যাথা হয়। অর্থাৎ ক্রমেই রোগীর চলাচল এবং ব্যাথার আক্রমনের মধ্যবতী সময়টা কমে আসতে থাকে।

২. রোগী বিশ্রামরত অবস্তায়ও যদি ব্যাথা অনুভব করে, বুছতে হবে গ্যাংগ্রিন হতে আর বেশি দেরি নেই।

সেক্ষেত্রে রোগী পায়ের পাতায় বেমি ব্যাথা অনুভব করে ।

রাতে এই ব্যাথা তীর্ব হয়্ পা ওপরে তুরে বা বিছানার বাইরে ঝুলিয়ে রোগী ব্যথা থেকে মুকিতর পথ খোজে।

কথনো কথনো শীতল মেঝেতে দাড়িয়ে আরম পেতে চায়।

কিন্তু ব্যতা একসময় এত অসহনীয় হয়ে ওঠে যে রোগী ঘুমানোর জন্য বিছানা ছেড়ে চেয়ার বেছে নেয়। সারারাত কেটে যায তার সীমাহীন অস্তিরতায়।

৩, বিশ্রামররত অবস্থায় যে ব্যাথা হয়, পা ওপরে ওঠলে বা নড়াচড়া করলে সে ব্যাথা আরো বেড়ে যায়্ রোগরি ঘুম নষ্ট হয়ে যায়। দিনে দিনে আরো বিদ্ভাস্ত হয়ে যায়। তার মুখের দিকে তাকালেই যন্ত্রনাক্লিস্ট মুখ চোখে পড়ে।

৪. রোগীর পা টনটানকরে এবং তা অসাড় বা অনুভূতিশুন্য হয়ে আসে । আক্রান্ত অংশ শরীরের অন্যন্যা অংমের চেয়ে ঠান্ডা থাকে।

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

৫. আক্রান্ত পা গ্যাগ্রিনের জন্য কারো হয়ে যায় এবং কুচকে যায়। পচন থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে।

৬. অবিরাম ব্যথা এবং নিদ্রাহীন রাত রাটানোর ফলে রোগলি চেহারঅয অসময়ে বয়সের ছাপ পড়ে এবং চোখ মুখ ভেতরে বসে যায়। নস্ট হয়ে যায চেহারার ঔজ্জ্বলা । সেখানে দারুন এক আতঙ্ক ভর করে।

৭. রোগী বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসতে পচ্ছন্দ করে। চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে অনিচ্ছা প্রাকশ করে । সে তার আক্রান্ত পা কাউকে ধরতে দিতে চায় না।   এমনকি চিকিৎসকও তার পা স্পর্শ করামাত্র সে পিলে চমকানো কাতধ্বনি করে ওঠে।

  • চিকিৎসক রোগীর আক্রান্ত পায়ে কী পরীক্ষা করেন?

প্রথমত চিকিৎসক রোগলি পা গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করেন।

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

তিনি সস্থ পায়ের সেঙ্গে আক্রান্ত পা টি মিলিয়ে দেখেন। রোগীর পায়ের রং পরিবর্তন হয়েছে কিন্ বা কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে তা লক্ষ্য করেন।আক্রান্ত পায়ের ভারো অংশের সঙ্গে খারপ অংমের মদ্যে কোনা নির্দিস্ট রেখা আছে কি না পরীক্ষা করেন, পায়ে স্বাবাবিক লোম আছে কিনা, লোম কম কিংবা একেবারেই অনুপস্থিত কিনা, রোগীর পায়ের ত্বক শুকিয়ে গেচে কিন্ বা তা কুচকে গেছে কিন্ ঘা আছে কিনা নখের অবস্থা কেমন সাংসপেশি শুকিয়ে গেছে কিনা ইত্যাদি অনেক কিছু পরখ করেন।

অতঃপর তিনি হাত দিয়ে রোগীর পায়ের উত্তাপ, রক্তনালির স্পন্দন, অনুভূতি ইত্যাদি অনুভব করার চেষ্টা করেন।চিকিৎসক রোগরিকে পরীক্ষা কের যা পান তাহেলো-

এক.(থেকে থেকে ব্যাথার ক্ষেত্রে)

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

  • পায়ের রং স্বাভাবিক থাকে
  • সুস্থ পায়ের তুলনায় আক্রান্ত পা ঠান্ডা থাকে
  • ডরসালিস পেডিস, পোস্টেরিওর টিবিয়াল, পপলেটিয়াল প্রভৃতি ধমনরি স্পন্দন দুর্বর কিংবা অনুপস্থিত থাকে
  • পায়ের রক্ত সঞ্চালন, সংবেদনষীলতা কিংবা উদ্দীপনাক্রিয়া স্বাভাবিক থাকতে পারে।
  • রোগকে চিৎ করে শুয়ে আক্রান্ত পা খাড়াবাবে ওপরে তুলরে দুই তিন মিনিটের মদ্যে পাটি ফ্যাকাশে বিবর্ন হয়ে যায়। আবার অনুভুমিক রেখার নিচে পা নামারে তা নীল হেয়ে যায়।

দুই. (বিশ্রামকালীন ব্যথার ক্ষেত্রে)

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

  • পায়ের রং কারো হতে পারে
  • লোমের অনুপস্তিতি থাকতে পারে
  • মাংসপেশী শুকিয়ে যেতে পারে
  • পায়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে তাপ কম থাকে
  • রক্তনালি স্পন্দন দুর্বল কিংবা তা অনুপস্থিত থাকে
  • রোগীকে চিৎকারে শুয়ে তার পা ২০ ডিগ্রি ওঠালেই তা বিবর্ণ হয়ে যায়।

তিন. (গ্রাংগ্রিনের ক্ষেত্রে)

  • পায়ের আঙুল থেকে পচন শুরু হয় , পা কোলো হয়ে যায়।
  • আক্রান্ত স্থান শুকিয়ে যায়।
  • মৃত এবং জীবিত টিস্যুর মধ্যবর্তি স্থানে স্পষ্ট রেখা থাকে
  • লোম খসে পড়ে
  • নখ পড়ে যায় কিংবা নখের পরিবর্তন হয়।
  • গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত অঙমে রক্তনালির স্পন্দন অনুপস্থিত থাকে।
  • মৃত অংশ অনুভূতিহীন থাকে
  • পা ঠান্ডা থাকে

চার. (ঘা বা ক্ষতের ক্ষেত্রে)

গ্রাংগ্রীন এবং ঘা প্রায় একই সময়ে শুরু হয়্ যেসব স্থানে চাপ লগে সেসব স্তানে ঘা হতে থাকে। রোগীর ব্যথায় ছটফট করে।

  • চিকিৎসা ব্যবস্থা

এর দু’ধরনের চিকিৎসা রয়েচে। একটি সতর্কতামুলক অপরটি শল্যচিকিৎসা। সতর্কতামূলক চিকিৎসা হলো স্রেফ রোগীকে রোগ সম্পর্কে সর্ত করে দেয়া।তাতে কাজ না হলে পরে রোগ এমন এক পর্যয়ে এস পৌছায় যে অপারেশন অপরিহার্য হয়ে পড়ে।

 

  • সতর্কতামূলক চিকিৎসা
  • ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

  • রোগীকে কড়াকড়ি ধুমপান বর্জন করতে হবে
  • পায়ের পাত সর্বদাদ পরিক্সার ও মুকনো রাখতে হবে
  • পায়ের আঙুলের নখ পরিস্কার রাখতে হবে এবং সতর্কভাবে কাটতে হবে
  • সর্বদা নরম এবং ঠিকমতো পায়ে লাগে এমন জুতো পরতে হবে।
  • পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, ব্যায়াম করতে হবে
  • ব্যথানাশক এবং রক্তনালির প্রাসরণে ওষুধ খাওয়া যেতে পারে
  • প্রযোজন হলে নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে এবং কোনো ইনফেকশন থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে

 

  • শল্য চিকিৎসা

বার্জার’স ডিজিজের রোগীকে রোগ নীরাময়ের ক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এ্ক্ষেত্রে  প্রথম যে অপারেশনটি করা হয়তার নাম ‘লামাবার সিমপ্যাথেকটমি’। এচাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্র আক্রান্ত পা কেটে বাদও দেয়া হয়্ সাধরনত পচন শরু হলে রোগীর পা কেটে ফেলতে হবে। আবার সিমপ্যাথেকটমি করানো চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরেও অ্যামপুটেশন বা পা কেটে ফেলা হয়।

বার্জার ডিজিজের রোগীর জন্য নুতুন চিকিৎসা

ধুমপায়ীদের জন্য একটি মারাত্বক রোগ বর্জার’স ডিজিস!

আক্রান্ত পা কেটে না দিয়ে বার্জার’স রোগের চিকিৎসা সম্ভব। এ অপারেশনটির নাম ‘ওমনটো প্লেক্সি’ ।এ্ক্ষেত্রে পাকস্থলীর কাছ থেকে ওমেনটামশিরা বিচ্ছিন্ন করে লম্বা সুতার মতো করেতা ত্বকের ঠিক নিচ দিয়েপায়ের আঙুল পর্যন্ত চেনে আনতে হয়। ফলে রক্তসঞ্চালনের বাধা দূর হয়। কিন্তু এত প্রচুর সময় লাগে। এছাড়া কিছু জটিলতার করন পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হয়নি। তবে চিকিৎসকরা যদি রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে ‘ওমনেটো প্লেক্সি’ শুরু করেন, তাহলে আশা করা যায় অনেক রোগী পঙ্গুত্বের হাত থেকে মুক্তি পাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *