বগুড়া জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন জনপদ। এই জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্যের জন্য সুপরিচিত। শিবতলাহাট বগুড়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী হাট, যা তার অবস্থান ও প্রসিদ্ধ খাবারের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
অবস্থান:
শিবতলাহাট বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। এটি বগুড়া শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। শিবতলাহাটের নিকটবর্তী অন্যান্য স্থানসমূহের মধ্যে রয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলা সদর, বগুড়া শহর, এবং মহাস্থানগড়। শিবতলাহাটের সন্নিকটে করতোয়া নদী অবস্থিত, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও পরিবহন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রসিদ্ধ খাবার:
শিবতলাহাট তার ঐতিহ্যবাহী ও সুস্বাদু খাবারের জন্য সুপরিচিত। এখানে স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়, যা স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতিফলন।
১. শিক কাবাব:
শিবতলাহাটের শিক কাবাব বিশেষভাবে পরিচিত। শতাব্দী ধরে এই অঞ্চলে শিক কাবাব প্রস্তুত ও পরিবেশন করা হচ্ছে। প্রস্তুত প্রণালী ও কারিগরের দক্ষতা শিক কাবাবের স্বাদকে অনন্য করে তুলেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে স্থানীয় বাজারে এই শিক কাবাব পাওয়া যায়, যা মসলাদার রুটির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
বগুড়ার লাচ্ছা সেমাই এতোটাই জনপ্রিয়, দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশী চাহিদা মিটিয়ে যায় বিদেশেও। বগুড়ার প্রসিদ্ধ আকবরিয়ার লাচ্ছা ও সাদা চিকন সেমাই স্বাদে অতুলনীয়।
৩. আলু ঘাটি:
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার আলু ঘাটি। বগুড়াসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় মাংস আলু ঘাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগে মাছ দিয়ে আলু ঘাটি হলেও গত কয়েক বছরে মাংস দিয়ে আলু ঘাটি ভোজনরসিকদের মন জয় করে নিয়েছে।
৪. দই:
বগুড়ার দই এর খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বেও বিশেষ অবস্থানে সমাদৃত। শিবতলাহাটের দই তার স্বাদ ও গুণগত মানের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। স্থানীয় দই প্রস্তুতকারকরা প্রাচীন পদ্ধতিতে দই তৈরি করে, যা স্থানীয় জনগণের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।
৫. শিবতলাহাটের হাট:
শিবতলাহাটের হাট বগুড়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাট। এখানে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বিক্রি ও ক্রয় করেন। হাটের সময়ে বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় খাবার ও পণ্য পাওয়া যায়, যা স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতিফলন।
শিবতলাহাটের এই ঐতিহ্যবাহী খাবার ও স্থানীয় বাজারের সমন্বয় স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে আসলে স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও স্বাদের সমন্বিত অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়।