২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জনে পৌঁছেছে।
এই তালিকায় পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ১০৩ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪১৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৯৪ জন। নতুন ভোটার হিসেবে যুক্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন, যা মোট ভোটার বৃদ্ধির হারকে ১.৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রক্রিয়া:
নির্বাচন কমিশন প্রতি বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে, যাতে নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি এবং মৃত ভোটারদের অপসারণ নিশ্চিত হয়। ২০২৪ সালের ২ মার্চ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন।
সেই হিসেবে, ২০২৫ সালের খসড়া তালিকায় ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন।
লিঙ্গভিত্তিক ভোটার সংখ্যা:
বর্তমান খসড়া তালিকায় পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ১০৩ জন, যা মোট ভোটারের প্রায় ৫১.২৩ শতাংশ। নারী ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪১৫ জন, যা মোট ভোটারের প্রায় ৪৮.৭৬ শতাংশ। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা ৯৯৪ জন, যা মোট ভোটারের একটি ক্ষুদ্র অংশ।
নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি:
নতুন ভোটারদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা নারীর তুলনায় বেশি। পুরুষ ভোটার বেড়েছে ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫১৬ জন, যেখানে নারী ভোটার বেড়েছে ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৪ জন।
এই পার্থক্য সমাজের বিভিন্ন স্তরে লিঙ্গভিত্তিক সচেতনতা এবং অংশগ্রহণের প্রভাব নির্দেশ করে।
ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ:
ইসি জানিয়েছে, খসড়া তালিকা নিয়ে কোনো দাবি-আপত্তি থাকলে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করা যাবে। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এছাড়া, ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
ভোটার হওয়ার বয়স নিয়ে আলোচনা:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন, যা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেছেন, এটি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারে।
সার্বিক পর্যালোচনা:
বাংলাদেশের ভোটার সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি এবং লিঙ্গভিত্তিক সমতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।