বগুড়া জেলার বিহিগ্রাম হাট : অবস্থান ও প্রসিদ্ধ খাবার

1/5 - (1 vote)

বগুড়া জেলার ঐতিহ্যবাহী হাটগুলোর মধ্যে মহাস্থান হাট অন্যতম। প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো এই হাটটি উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় পাইকারি সবজি বাজার হিসেবে পরিচিত। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড়ের নিকট অবস্থিত এই হাটে প্রতিদিন ২ কোটি টাকারও বেশি সবজি কেনাবেচা হয়। বগুড়া ছাড়াও গাইবান্ধা, রংপুর, জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকরা এখানে সবজি নিয়ে আসেন, যা সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

বগুড়া জেলার হাটগুলোর মধ্যে মহাস্থান হাট ছাড়াও বুড়িগঞ্জ হাট, শিবগঞ্জ সদর হাট, মোকামতলা হাট, জিয়ানগর হাট, ধাপের হাট, তিনদিঘী হাট, বিবিরপুকুর হাট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি হাট নির্দিষ্ট দিনে বসে এবং স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে আসেন।

বগুড়া জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে দই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রায় দেড়শ’ বছর আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোষ পরিবারের হাত ধরে বগুড়ায় দইয়ের উৎপাদন শুরু হয়। পরে বগুড়ার নওয়াব আলতাফ আলী চৌধুরীর পৃষ্ঠপোষকতায় শেরপুরের ঘোষ পরিবারের সদস্য গৌর গোপাল বগুড়া শহরে দই উৎপাদন শুরু করেন। বগুড়ার দই ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়া, রানী এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুলুকে পৌঁছে গেছে, যা বগুড়ার জন্য গর্বের বিষয়।

দই ছাড়াও বগুড়ার ক্ষীর, স্পঞ্জের মিষ্টি, মহাস্থানগড়ের চাউলের কটকটি, লাচ্ছা সেমাই, শিক কাবাব, মুরগি ও গরুর চাপ ইত্যাদি সুস্বাদু খাবার জনপ্রিয়। মহাস্থানগড়ের পীর শাহ সুলতানের মাজারের শিরনি বা তবারক হিসেবে চাউলের কটকটির প্রচলন হয়। বগুড়ার লাচ্ছা সেমাই দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়। শিক কাবাবের জন্য শহরের সাতমাথা এবং কলোনী এলাকা বিশেষভাবে পরিচিত। কলোনি এলাকায় গরুর গোস্তের চাপ, মুরগির ভাজা মাংস, পুরি ইত্যাদি খাবার সন্ধ্যা থেকে পাওয়া যায়।

বগুড়ার লাল মরিচের সুখ্যাতি দেশজুড়ে। এখানে প্রচুর পরিমাণে মরিচ উৎপাদন হয়, যা দেশের সীমানা ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যেও রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়া বগুড়ার আঠা আলু ভর্তার স্বাদ অন্য সব আলুর থেকে আলাদা।

বগুড়া জেলার হাট ও খাবারের এই ঐতিহ্য স্থানীয় সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

OK

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *