পরিচিতি
বগুড়া জেলা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধশালী জেলা। এই জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার স্থানীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তেমনই একটি প্রাচীন ও পরিচিত হাট হলো ভালশুন পুরাতনহাট।
অবস্থান
ভালশুন পুরাতনহাট বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় অবস্থিত। এটি জেলার অন্যান্য হাটের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী হাট হিসেবে পরিচিত। হাটটি স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিলনস্থল।
প্রসিদ্ধ খাবার
বগুড়া জেলা তার ঐতিহ্যবাহী ও সুস্বাদু খাবারের জন্য সুপরিচিত। ভালশুন পুরাতনহাটের আশেপাশে এবং সমগ্র বগুড়া জেলায় কিছু বিশেষ খাবার রয়েছে যা স্থানীয় ও দূরদূরান্তের মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়।
বগুড়ার দই
বগুড়ার দই বাংলাদেশের সর্বত্র বিখ্যাত। এর বিশেষ স্বাদ ও মানের জন্য এটি দেশজুড়ে সমাদৃত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে শেরপুর উপজেলার ঘোষ পরিবার প্রথম দই তৈরি শুরু করে। পরবর্তীতে এটি বগুড়া শহরসহ অন্যান্য এলাকায় জনপ্রিয় হয়। বগুড়ার দই ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়া, রানী এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকেও পৌঁছেছে।
চালের কটকটি
মহাস্থানগড়ের প্রসিদ্ধ খাবার চালের কটকটি। সুগন্ধি চালের আটা, গুড় ও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টান্নটি মহাস্থানগড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়। মহাস্থানগড়ের পীর শাহ সুলতানের মাজারের শিরনি বা তবারক হিসেবে কটকটির প্রচলন হয়। বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ওরশে দিনে প্রায় ৫০ লাখ টাকার কটকটি বিক্রি হয়। এখন এটি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
লাচ্ছা সেমাই
বগুড়ার লাচ্ছা সেমাই দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়। বিশেষ করে আকবরিয়ার লাচ্ছা ও সাদা চিকন সেমাই স্বাদে অতুলনীয়।
শিক কাবাব
বগুড়ার আরেক জনপ্রিয় খাবার হলো শিক কাবাব। প্রস্তুতপ্রণালী এবং প্রস্তুতকারকের দক্ষতার কারণে বগুড়ার শিক কাবাবের স্বাদ অন্যসব জায়গার শিক কাবাব থেকে আলাদা। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শহরের সাতমাথা এবং কলোনী এলাকায় এই শিক কাবাব ও মসলাদার রুটি পাওয়া যায়।
গরুর চাপ
বগুড়ার গরুর মাংসের চাপ ব্যাপক জনপ্রিয়। শহরের কলোনী এলাকায় সন্ধ্যা থেকে গরুর চাপ, মুরগির ভাজা মাংস, পুরি ইত্যাদি খাবারের দোকানে প্রতিদিন ভিড় লেগেই থাকে।
ভালশুন পুরাতনহাট বগুড়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী হাট, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হাটটির আশেপাশে বগুড়ার বিখ্যাত দই, চালের কটকটি, লাচ্ছা সেমাই, শিক কাবাব এবং গরুর চাপের মতো সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়, যা স্থানীয় ও দূরদূরান্তের মানুষের মধ্যে সমাদৃত।