মুরইলহাট বাংলাদেশের বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের মুরইল গ্রামে অবস্থিত। বগুড়া কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে মুরইল বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে সেখান থেকে দক্ষিণে প্রায় ১ কিলোমিটার পাকা রাস্তা পায়ে হেঁটে বা রিকশাযোগে মুরইলহাটে পৌঁছানো যায়।
মুরইলহাটের ঐতিহ্য ও গুরুত্ব
মুরইলহাট কাহালু উপজেলার একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী হাট। এটি স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মিলনস্থল। হাটে বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য, গবাদি পশু, হস্তশিল্প এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বেচাকেনা হয়। এছাড়া, স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন হিসেবে হাটে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
মুরইলহাটের প্রসিদ্ধ খাবার
বগুড়া জেলা তার সমৃদ্ধ খাদ্য সংস্কৃতির জন্য সুপরিচিত, এবং মুরইলহাট এই ঐতিহ্যের অংশীদার। হাটে আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা স্থানীয় বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। নিচে মুরইলহাটের কিছু প্রসিদ্ধ খাবার উল্লেখ করা হলো:
মাংস আলু ঘাটি
মাংস আলু ঘাটি বগুড়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা মুরইলহাটসহ আশপাশের এলাকায় জনপ্রিয়। প্রথমে মাছ দিয়ে আলু ঘাটি তৈরি করা হলেও, বর্তমানে মাংস দিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। গরুর মাংস, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, বিভিন্ন মসলা এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে এই খাবারটি রান্না করা হয়। এর স্বাদ অতুলনীয়, যা ভোজনরসিকদের মন জয় করে নিয়েছে।
বগুড়ার দই
বগুড়ার দই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পরিচিত। প্রায় দেড়শ বছর আগে শেরপুর উপজেলার ঘোষ পরিবারের হাত ধরে বগুড়ায় দইয়ের উৎপাদন শুরু হয়। এর স্বাদ ও মানের জন্য বগুড়ার দই বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে।
শিক কাবাব
বগুড়ার শিক কাবাব তার বিশেষ প্রস্তুত প্রণালী এবং স্বাদের জন্য সুপরিচিত। মুরইলহাটে আসা ভোজনরসিকরা এই সুস্বাদু শিক কাবাবের স্বাদ নিতে পারেন।
লাল মরিচ
বগুড়ার লাল মরিচের খ্যাতি দেশজুড়ে। এর উজ্জ্বল লাল রঙ এবং মাঝারি ঝালের মাত্রা তরকারির স্বাদে বিশেষ মাত্রা যোগ করে। মুরইলহাটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এই লাল মরিচ পাওয়া যায়।
উপসংহার
মুরইলহাট বগুড়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী হাট, যা স্থানীয় অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং খাদ্য সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানকার প্রসিদ্ধ খাবারগুলো ভোজনরসিকদের আকৃষ্ট করে এবং বগুড়ার সমৃদ্ধ খাদ্য ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটায়।